ভাসানচরে রোহিঙ্গা শরণার্থী পুনর্বাসনে যুক্ত হতে চায় জাতিসংঘ শীর্ষক সংবাদটি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তা ও পরিকল্পনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে যখন লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়, তখন প্রধানত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা বিবেচনা করে অনেকেই এর তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন। আশার কথা এই যে, বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টেছে। গত মঙ্গল ও বুধবার দুদিন জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের ১৪ সদস্যের প্রতিনিধিদল ভাসানচর ও কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর অবস্থা সরেজমিন পরিদর্শন করেন। পরে ঢাকায় আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে। অতঃপর যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে সুস্পষ্টভাবে বলেন যে, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাসের পরিবেশ কক্সবাজারের চেয়ে ভাল। সেক্ষেত্রে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনেও যুক্ত হবে জাতিসংঘ। এর জন্য তারা অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা করতেও সম্মত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানাবে। উল্লেখ্য, চার বছরেরও বেশি সময় ধরে উদ্বাস্তু রোহিঙ্গারা নিজ বাসভূমে রাখাইনে ফিরে যেতে না পারায় হতাশায় নিমজ্জিত। যে কারণে তারা প্রায়ই ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। অনেকেই জড়িয়ে পড়ছেন নানা অপরাধ-অপকর্মে। বর্তমানে মিয়ানমারের রাজনৈতিক অবস্থাও নাজুক। সে অবস্থায় মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন আরও বিলম্বিত হতে পারে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশে আশ্রিত ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারের রাখাইনে পুনর্বাসনকল্পে প্রথম ভার্চুয়াল বৈঠকটি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রতিবেশী দেশ ভারতও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশকে। তবে প্রথম একটি অন্যতম পরাশক্তি ও প্রভাবশালী দেশ হিসেবে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় যুক্ত হলো চীন। দ্বিমতের কোন অবকাশ নেই যে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি জটিল ও সময়সাপেক্ষ। কাজেই এক-দুটি বৈঠকেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে- এমনটা নয়। বাংলাদেশ বলেছে, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রামভিত্তিক গুচ্ছ ভিত্তিতে শুরু হোক প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। তাতে প্রত্যাবাসনের বিষয়টি দ্রুত সম্পন্ন হতে পারে। অন্যদিকে মিয়ানমার বলেছে, রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাই করে বিক্ষিপ্ত বা বিচ্ছিন্নভাবে পাঠানো হোক। উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় দুই ধাপে যাচাই-বাছাইপূর্বক রোহিঙ্গাদের পাঠানো শুরু হলেও পরে তা স্থগিত হয়ে যায় দীর্ঘসূত্রতার কারণে। চীন অবশ্য বাংলাদেশের প্রস্তাবকে অধিকতর যুক্তিসঙ্গত ও গ্রহণযোগ্য মনে করছে। যাই হোক না কেন, চলতি বছরের এপ্রিল-মে নাগাদ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও অগ্রগতি নেই বললেই চলে। এ ক্ষেত্রে ভারতের প্রতিশ্রুত সহযোগিতাও প্রত্যাশিত অবশ্যই। কেননা, মিয়ানমার সরকারের ওপর দুই দেশের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। চীন ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কও উষ্ণ ও হৃদ্যপূর্ণ। অতঃপর অন্ধকার সুড়ঙ্গের প্রান্তে আলোর প্রত্যাশা করা যেতেই পারে। সম্প্রতি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। এর প্রতিবাদে প্রতিদিন সেখানে জনগণের ক্ষোভ-বিক্ষোভ সমাবেশ চলছে। গোলাগুলিতে নিহত ও আহত হওয়ার খবরও আছে প্রতিনিয়ত। আউং সান সুচির রাজনৈতিক দলটিকে নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়াও চলছে বলে জানা যায়। জান্তা প্রধান অঙ্গীকার করেছেন রোহিঙ্গাদের সেদেশে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়টিকে তার সরকার অগ্রাধিকার দেবে। ইতোমধ্যে রাখাইনে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টাও চলছে রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ পুনর্বাসনের জন্য, যা স্বস্তিদায়ক বলে বিবেচিত হতে পারে। এক্ষেত্রেও জাতিসংঘের সহায়তা প্রত্যাশিত। চলছে। গোলাগুলিতে নিহত ও আহত হওয়ার খবরও আছে প্রতিনিয়ত। আউং সান সুচির রাজনৈতিক দলটিকে নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়াও চলছে বলে জানা যায়। জান্তা প্রধান অঙ্গীকার করেছেন রোহিঙ্গাদের সেদেশে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়টিকে তার সরকার অগ্রাধিকার দেবে। ইতোমধ্যে রাখাইনে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টাও চলছে রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ পুনর্বাসনের জন্য, যা স্বস্তিদায়ক বলে বিবেচিত হতে পারে। এক্ষেত্রেও জাতিসংঘের সহায়তা প্রত্যাশিত।
Leave a Reply